- মনসা : এইকাব্যের মূল দেবী, শিব-কন্যা। চাঁদ সদাগরকে তার পুজো প্রচারে বাধ্য করেছে।
- বেহুলা : সবথেকে উল্লেখযোগ্য চরিত্র, পৌরাণিক সাবিত্রী চরিত্রের অনুকরণে বেহুলা চরিত্র অঙ্কিত।
- নেত/নেতা : মনসার সঙ্গী ও পরামর্শদাত্রী। মনসামঙ্গল কাব্যের উপেক্ষিত চরিত্র।
- সনকা : চাঁদ সদাগরের স্ত্রী, লখীন্দরের মাতা। মনসাভক্ত, আমাদের পরিচিত গৃহিণী চরিত্রের মতো।
- চণ্ডী : দেবখণ্ডের উল্লেখযোগ্য গৃহিণী চরিত্র, শিবের স্ত্রী। সতীন ভেবে মনসাকে কানা করে দিয়েছিল চণ্ডী।
- ঊষা : দেবখণ্ডের আর একটি চরিত্র। মনসার শাপে ঊষা বেহুলা হয়ে মর্ত্যে জন্মায়।
- কমলা : চাঁদ সদাগরের সহকারী ধন্বন্তরী ওঝার স্ত্রী ইনি। নিপাট বোকাসোকা বাঙালি বধূ।
- সনকার দাসী : চাঁদ সদাগরের অনুপস্থিতিতে সনকার প্রধান সাহায্যকারী ছিল এই দাসী।
- দক্ষিণ পাটন রাজ্যের রানী : সদাগর দক্ষিণ পাটন রাজ্যে বানিজ্য করতে গিয়ে সেখানকার রানীকে 'চটের থান'কে বহুমূল্য পোশাক বলে উপহার দিয়েছিলেন।
- অমলা : বেহুলার মাতা। একজন সাধারণ কূলবধূ।
-----------------------------------------------------
আরো পড়ুন : চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের চরিত্র
------------------------------------------------
মনসামঙ্গল কাব্যের পুরুষ চরিত্র
- চাঁদ সদাগর : এই কাব্যের প্রধান চরিত্র, এমনকি সমগ্র মধ্যযুগের সমগ্র চরিত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠ চরিত্র। মনসার সঙ্গে বিবাদে অটল পুরুষ।
- লখীন্দর : চাঁদ সদাগরের সপ্তম পুত্র, বেহুলার স্বামী। বিবাহবাসরে সর্পঘাতে মারা যায়। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেও সর্বৈব নিষ্ক্রিয় চরিত্র।
- শিব : দেবখণ্ডের চরিত্র। বৃদ্ধ শিব দুর্বল চরিত্রের মানুষ। কাম-লোলুপতার ফলস্বরূপ অযোনিজ মনসার জন্ম হয়। শিব মনসার পিতা।
- জরৎকারু : মনসার স্বামী। বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ জরৎকারুকে শিব মেয়ে মনসার স্বামী হিসেবে নির্বাচন করেছিল। পরে জরৎকারু মনসাকে ত্যাগ করে চলে যায়।
- ধন্বন্তরী ওঝা : চাঁদ সদাগরের পরম মিত্র। অন্যনাম শঙ্কর গারুড়ি। ঘোর সর্পবিরোধী।এর জন্যেই মনসার প্রয়োজন পড়েছিল আগে ধন্বন্তরী ওঝাকে হত্যা করা।
- অনিরুদ্ধ : দেবখণ্ডের চরিত্র, উষার স্বামী। শিবের অভিশাপে লখীন্দর হয়ে মর্ত্যে জন্মায়।
- সোমাই পণ্ডিত ও রামাই পণ্ডিত : চাঁদ সদাগরের পরিচিত দুজন পণ্ডিত। সোমাই পণ্ডিত বাণিজ্যযাত্রায় প্রাণ হারিয়েছে।
- সাহে বানিয়া/সায় বেনে: বেহুলার পিতা, একজন ধনী বণিক।
- হরি সাধু : চাঁদের প্রতিবেশী এক বণিক। কোনো কোনো মনসামঙ্গল কাব্যে ইনি বেহুলার দাদা হিসেবে পরিচিত।
- চন্দ্রধর মিতা : সপ্তডিঙা ডুবে গেলে চাঁদকে আশ্রয় দিয়েছিলেন একই নামের চন্দ্রধর বণিক। দুজনে মিতা পাতিয়েছিল। চাঁদকে বাড়ি ফিরতে সে তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিল।
- ধনা : চাঁদের নফর ও পরামর্শদাতা। বাণিজ্যকালে ধনার সুবুদ্ধি আমাদের চমকিত করে।
- কাজী হাসান-হোসেন : কাজী হাসান-হোসেন অত্যাচারী মুসলমান শাসক, আর এরা দুই ভাই। রাখালদের মনসাপূজা কাজীর পছন্দ হয়না।
- তকাই মোল্লা : কাজী হাসান-হোসেনের অনুচর। কাজীর নির্দেশে রাখালদের মনসাপূজার উপাচার নষ্ট করতে গিয়ে রাখালদের কাছে মার খায়।
- ঝালু-মালু : অতি দরিদ্র জেলে, ছেঁড়া জালে মাছ ধরে। এরা মনসার ঘট পেয়ে পরে ধনী হয়ে যায়।
- তারাপদ কর্মকার : চাঁদ এদ কাছে লোহার বাসরঘর তৈরির বরাত দিয়েছিল। নিপুণ কামার হলেও মনসার ছলনায় একটি ছিদ্রপথ রেখে দিয়েছিল বাসরঘরে।
- গোদা : একজন ঘাটোয়াল, অর্থাৎ ঘাট যে পাহারা দেয়। সুন্দরী বেহুলাকে নদীতে যেতে দেখে তাকে ধরতে গিয়েছিল। কিন্তু মাছ ধরার বড়শিতে আটকে গিয়েছিল সে।
- আপু ডোম : এও একজন ঘাটোয়াল।
- ধনা-মনা : এরা দুই ভাই বেহুলার ভেলা ধরতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে নদীতে পড়ে যায়।
- টেটন : ঘাটোয়াল, জাতিতে মালাকার। নদীতে গলায় কলসি বেঁধে আত্মহত্যা করার সময় বেহুলার তৎপরতায় সে বেঁচে যায়।
পড়ুন কমেন্ট করুন
উত্তরমুছুন